শিরোনাম :

জগন্নাথপুরে অপরিকল্পিত নদী খনন: লুটপাটের অভিযোগ পাউবো'র বিরুদ্ধে!


জগন্নাথপুর প্রতিনিধিঃ

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে অপরিকল্পিত ভাবে চলছে নলজুড় নদী খননের কাজ, নদীর মাটি বিক্রি করে পাউবো লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। অন্যদিকে নদী খননে বরাদ্দকৃত অর্থ ও লূটপাট করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের এস ও হাসান গাজীর বিরুদ্ধে

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় নকশা অনুযায়ী কাজ করছেনা পাউবো, যেভাবে পরিকল্পিত খনন হবার কথা কাজ সেভাবে হচ্ছেনা, যত্রতত্র স্থানে মাটি স্তুপ আকারে রাখার কারণে স্থানীয়দের ভোগান্তি সৃষ্টি করছেন তারা, অন্যদিকে নদী খনন করে মাটিগুলো নিয়ম মাফিক যেভাবে স্লোপ করে রাখার কথা, সেভাবে না রাখায় সামান্য বৃষ্টিতেই মাটি ধ্বসে বিভিন্ন স্থানে বিশাল আকারের ফাটল দেখা দিয়েছ

নদী পারের পিংলার হাওরে প্রায় ৩০০ একর জমি রয়েছে, এবার বুরো মৌসুমে জমিতে কৃষকদের ধানের ফলন অত্যন্ত ভালো হলেও, ধান ঘরে তুলতে যাতায়াতের একমাত্র রাস্তায় পাউবোর অপরিকল্পিত মাটি ভরাটের কারণে দুঃশ্চিন্তার ভাজ পরেছে কৃষকদের কপালে। তারা বলছেন আমরা কোথায় যাবো? কার কাছে যাব? আর কোনদিক দিয়ে আমাদের সোনার ফসল ঘরে তুলবো? কে শোনবে আমাদের কথা?

এদিকে নাদী পারে বসবাসরত অবৈধ দখলদারদের সাথে আতাত করে, নদীর মাটি দিয়ে এসব দখলদারদের কাছ থেকে লক্ষ্য লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।

অন্যদিকে নদীর পাশের জমির মালিকদের জমিগুলো, বিশাল অংকের টাকার বিনিময়ে খননকৃত নদীর মাটি দিয়ে ভরাট করে দিচ্ছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান "নেশন টেক" 

সম্প্রতি জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনের সার্ভেয়ার নদীর সীমানা চিহ্নিত করে দিলেও, পাউবো ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সীমানা অনুযায়ী নদী খননের কাজ করছে না

এবিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নেশন টেক এর দায়ীত্বে থাকা খায়রুল ইসলাম বলেন,  কাজ করলে অভিযোগ তো স্বাভাবিক থাকবেই! আমরা নিয়ম বহির্ভূত কোনো কাজ করিনি

স্থানীয় কৃষক আব্দুল খালিক বলেন, তারা আমাদের কথা চিন্তা না করে, সোনার ফসল ঘরে তুলার একমাত্র রাস্তায় ইচ্ছামতো মাটি স্তুপ করে রেখেছে, এখন আমরা কিভাবে ফসল ঘরে তুলবো?

জগন্নাথপুর পৌরসভার সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র ও, ৫ নং ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর শফিকুল হক শফিক পাউবোর এস ও হাসান গাজীর বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম আর দুর্নীতির অভিযোগ করে বলেন, তারা নদী খননের কাজকে গুরুত্ব না দিয়ে মানুষের কাছ থেকে টাকা নিয়ে, তার বিনিময়ে নদীর মাটি দিয়ে মানুষের ভিটেবাড়ি তৈরি করে দিচ্ছে। অন্যদিকে শ্মশান ঘাটের রাস্তার মাটি কেটে ও তারা বিক্রি করেছে। তিনি আরো বলেন রাস্তায় মাটি স্তুপ করে রাখার কারণে কৃষকরা দুঃশ্চিন্তায় রয়েছেন, কিভাবে তারা তাদের কষ্টের সোনার ফসল ঘরে তুলবেন, যথাযথ কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি তদন্ত করে ব্যাবস্থা গ্রহণের জন্য আহবান জানিয়েছেন তিনি। 

এ ব্যাপারে লুটপাটের অভিযুক্ত জগন্নাথপুর উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা (এস ও) হাসান গাজীর সাথে বার বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তিনি সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে রাজি নন। 

এবিষয়ে মোবাইলে  সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, পাউবোর কর্মকর্তাকে কঠোর ভাবে বলা হয়ছে নলজুর নদীর খননে কোন অনিয়ম আর দুর্নীতি সহ করা হবেনা, যদি কোনো অনিয়ম আর দুর্নীতি হয় কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।


Commentbox

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post

Recents