মুরাদ মিয়া, বিশেষ প্রতিনিধিঃ
তাহিরপুর উপজেলার দেশের দ্বিতীয় রামসার সাইট টাঙ্গুয়ার হাওরের পরিবশ ও জীববৈচিত্র্য এমনিতেই মানব সৃষ্ট বিভিন্ন দূষণে হুমকির মুখে পড়েছে। এর মাঝে হাওরের পরিবেশ ক্ষতিকর প্রধান সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়ে চিংড়ি মাছধরার জন্য ব্যবহৃত প্লাস্টিকের চাঁই।বিগত আট/দশ বছর ধরে টাঙ্গুয়ার হাওর সহ সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার ছোটবড় সবকটি হাওরে এর অবাধ ব্যবহার দিন দিন বেড়েই চলেছে। এতে চরম হুমকির মুখে রয়েছে টাঙ্গুয়ার হাওর সহ উপজেলার ছোটবড় প্রত্যেকটি হাওর।
স্থানীয় সচেতন মহলের মতে চাঁইগুলো প্লাস্টিকের হওয়ায় এগুলো পচনশীল নয়,আর এসব অপচনশীল চাঁই মাছ ধরার জন্য অবাধেই ব্যবহার হচ্ছে,আর এসব প্লাস্টিকের চাঁই ব্যবহারের পর জেলেরা হাওরেই যত্রতত্র ফেলে রেখে দেয়।এতেকরে হাওরের জলচর প্রাণীসহ মাছের জন্যও ক্ষতিকর হয়ে দাঁড়িয়েছে।তারা মনে করেন এই প্লাস্টিকের চাঁই ব্যবহার রোধ না করা গেলে টাঙ্গুয়ার হাওর সহ আশেপাশের হাওরগুলোর পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য আরও ঝুঁকির মুখে পড়বে।
সরেজমিনে টাঙ্গুয়ার হাওর সহ উপজেলার মাটিয়ান হাওর,বনুয়ার হাওর ঘুরে দেখাযায় হাওরগুলোর চারপাশে ছড়িয়ে ছিটে রয়েছে প্লাস্টিকের চাঁই।এ ব্যাপারে টাঙ্গুয়ার হাওরে চিংড়ি মাছ ধরা অবস্থায়,স্থানীয় ইন্দ্রপুরী গ্রামের প্রবীণ মৎস্যজীবী নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জেলের কাছে জানতে চাইলে উনি বলেন,৭-৮বছর পূর্বে শুধুমাত্র বাঁশের তৈরি চাঁই দিয়েই চিংড়ি মাছ ধরা হত।তবে এরপর থেকে একাধিকবার ব্যবহার ও কম খরচে তৈরি করা প্লাস্টিকের চাঁই এখন স্থানীদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এতে মাঝেমধ্যে বাধাবিঘ্ন হলেও এই চাঁই ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পেয়েছে।
চাঁই গুলো দেখতে গোলাকার বৈশিষ্ট্যের হয় । প্লাস্টিক মুড়িয়ে বাঁশের কঞ্চি ও তার দিয়ে এই চাঁই তৈরি করা হয়
হাওর পাড়ের মাহমুদ মিয়া,বকুল মিয়া,সালাম মিয়া,নামের একাধিক জেলে জানান প্লাস্টিকের চাঁই দিয়ে খুব সহজে বেশি পরিমাণ চিংড়িসহ ছোট মাছ শিকার করা যায়।বর্তমানে পুরো হাওরজুড়ে এবং শুকনো মৌসুমে হাওরের বিল অথবা নদীনালায় পানির নিচে সারিবদ্ধভাবে সুতো দিয়ে বেধে খুড়াময়দার টোপ দিয়ে প্লাস্টিকের চাঁই রেখে দেওয়া হয়।সকালে এসব চাঁই তুলে এর ভিতর থেকে চিংড়ি ও ছোট মাছ বের করে সেগুলো এমনি ফেলে রেখে দেওয়া হয়।চাঁই গুলো নষ্ট হয়ে গেলে এভাবেই পানির নিচে থেকে যায়।
রাজধানী ঢাকা হতে ঘুরতে আসা পর্যটক পরিবেশবাদী এনামুল কবীর বলেন প্লাস্টিক পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।প্লাস্টিক ব্যবহারের পর যদি হাওরে যত্রতত্র ফেলে রাখে তাহলে হাওরের পরিবশ ও জীববৈচিত্র্য চরম হুমকির মুখে পড়বে।তিনি বলেন এগুলো ব্যবহার রোধে স্থানীয় হাওরবাসীকে সচেতনতা বৃদ্ধি ও আইনের সঠিক প্রয়োগ অত্যন্ত জরুরী।তিনি আর বলেন প্লাস্টিক অপচনশীল,আর এসব প্লাস্টিকের ধারা মাছ ধরার চাঁই পানির নিচে ও জলাশয়ে ফেলে রাখলে মাছসহ জলচর বিভিন্ন প্রাণীর জন্য চরম ক্ষতিকর।
এ ব্যাপারে তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃরায়হান কবীর এর সাথে যোগাযোগ করলে উনি বলেন এ ব্যাপারে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Commentbox