মুহিবুর তালুকদার দিরাই প্রতিনিধিঃ
সুনামগঞ্জ ২ (দিরাই-শাল্লা) আসনে সংসদ সদস্যের দেওয়া এলাকাভিত্তিক বরাদ্দ টিআর কাজের অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। নিম্নমানের কাজ, মাটি ভরাট না করেই বিল উত্তোলন, সড়ক সংস্কার কাজের অনিয়ম ও দুনীতির ঘটনায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। ২০২০-২০২১ অর্থ বছরের গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার কাবিখা প্রকল্পের আওতায় কাজের জন্য ৪টি ইউনিয়নে প্রকল্প বরাদ্দ হয়। সংসদ সদস্য জয়া সেনগুপ্তা এমপির নির্বাচনী এলাকায় প্রকল্পের কাজের বরাদ্দ দেয়া হলেও সিন্ডিকেটের মাধ্যমে এসব বরাদ্দ লুটপাট হচ্ছে। নামমাত্র কাজ করেই প্রকল্প কর্মকর্তার যোগসাজশে বিল উত্তোলণ করেছে প্রকল্পের সভাপতিরা।
উপজেলার ৩নং বাহাড়া ইউনিয়নের ভাটগাঁও কালভার্ট হতে আব্দুল হকের জমি পর্যন্ত ৫শ’ ফুট হাওরে গোপাট মেরামত কাজের অনিয়মে ফুসে উঠেছে ভাটগাঁও গ্রামবাসি। এই প্রকল্পের যে পরিমাণের মাটি কাটার কথা ছিল তার চেয়ে সামান্য মাটি কেটে বাকি টাকা হয়েছে লুটপাট। প্রকল্পটির সভাপতি ভাটগাঁও গ্রামের আজমান মিয়ার ছেলে আলেক মিয়া। তিনি রাজনৈতিক ক্ষমতাকে ব্যবহার করে লক্ষ টাকার প্রকল্পে কাজ করেছে মাত্র কয়েক হাজার টাকার। এই বিষয়ে ভাটগাও গ্রামের বাসিন্দা হুমায়ুন আহমেদ প্রকল্প কর্মকর্তা বরাবরে অভিযোগও করেছেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে কয়েকদিন কাজ বন্ধও ছিল। এরপর রাজনৈতিক ক্ষমতায় এসব অভিযোগ পড়ে থাকে প্রকল্প কর্মকর্তার টেবিলেই। বিভিন্ন কৌশলে প্রকল্পে বরাদ্দের ৫০ ভাগ টাকাও উত্তোলণ করেন প্রকল্পের সভাপতি আলেক মিয়া।
ভাটগাঁও গ্রামের মোঃ আক্কল আলী বলেন, আমি দেখছি ওই প্রকল্পে ১০জন লোক মাত্র ২দিন কাজ করেছে। এখানে নামমাত্র কাজ দেখানো হয়েছে। একই গ্রামের মোঃ সালেহ্ রহমান বলেন, কি বলবো ভাই, প্রকল্পের কাজতো কিছুই হয়নি। এগুলোতো লুটপাটের ধান্দা মাত্র। ওইগ্রামের আরেক বাসিন্দা মোঃ হুমায়ূন আহম্মদ জানান, রাস্তাটি ১২ফুট প্রশস্ত ও ১ফুট উচু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আলেক রাস্তার কাজ করেছে প্রস্থে ৮ফুট ও উচ্চতায় ৪-৫ ইঞ্চি মাত্র। তিনি আরো বলেন, প্রাক্কলণে রাস্তাটি ৫শ’ ফুট দৈর্ঘ্য হলেও কাজ হয়েছে আনুমানিক ৩শ’ ফুট দৈর্ঘ্যে।
এব্যাপারে প্রকল্প সভাপতি মোঃ আলেক মিয়ার সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, নীতিমালা অনুযায়ী আমি কাজ করেছি। প্রকল্প কর্মকর্তার নির্দেশ মতেই আমার প্রকল্পে মাটি কাটা হয়েছে। এখানে কোনো দুর্নীতি হয়নি।
এবিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শেখ মোঃ ফজলুল করিমের মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, উক্ত প্রকল্পের অনুকুলে ৫০হাজার টাকা ছাড় করা হয়েছে। ইষ্টিমেট মোতাবেক প্রকল্প কাজ না হলে আমি আর বিল দেবো না। পাশাপাশি প্রকল্পের কাজ ৯০% সম্পন্ন হয়েছে বলেও জানান তিনি। তবে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার এরূপ বক্তব্যকে সরাসরি নাকচ করেছেন ভাটগাঁও গ্রামবাসী।
Commentbox