শিরোনাম :

মিথ্যা মামলায় যুগান্তরের দিরাই প্রতিনিধি গ্রেফতার



স্টাফ রিপোর্টারঃ

জলমহাল লুটপাটের মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় দিরাই প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক যুগান্তরের দিরাই উপজেলা প্রতিনিধি জিয়াউর রহমান লিটনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। 

বৃহস্পতিবার গভীর রাতে সাজানো মামলায় আসামি দেখিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। শুক্রবার বিকালে তাকে সুনামগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নেওয়া হলে তার জামিন প্রার্থনা করেন আইনজীবীরা। আদালত থেকে তাকে জামিন না দিয়ে জেলহাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন। আগামী রোববার মামলার শুনানির দিন ধার্য করেন।


এদিকে দিরাই প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক যুগান্তরের দিরাই উপজেলা প্রতিনিধি জিয়াউর রহমান লিটনকে গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা ও  প্রতিবাদ জানিয়েছেন সাংবাদিক নেতা ছাড়াও বিভিন্ন মহল। 


দিরাই পৌরসভার মেয়র বিশ্বজিৎ রায় এক বিবৃতিতে বলেছেন, একটি কুচক্রী মহলের জিঘাংসার স্বীকার হয়েছেন জিয়াউর রহমান লিটন। তাদের বিভিন্ন অপকর্ম নিয়ে লেখালেখি করায় তাকে টার্গেট করে ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় ফাঁসানো হয়েছে।


সাংবাদিক নেতাদের মধ্যে নিন্দা জানিয়েছেন- সিলেট প্রেস ক্লাবের সভাপতি ইকবাল সিদ্দিকী, সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রশিদ রেনু, কানাইঘাট প্রেস ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এমএ হান্নান, সুনামগঞ্জ রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি লতিফুর রহমান রাজু ও সাধারণ সম্পাদক হিমাদ্রী শেখর ভদ্র, সুনামগঞ্জ প্রেস ক্লাব (একাংশের) সভাপতি মাহবুবুর রহমান পীর ও সাধারণ সম্পাদক সিদ্ধার্থ রঞ্জন আচার্য্য, দিরাই প্রেস ক্লাবের সভাপতি শোয়েব হাসান, সহ-সভাপতি শামসুল ইসলাম মাস্টার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবু হানিফ চৌধুরী, কোষাধ্যক্ষ প্রশান্ত সাগর দাস, দিরাই রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক হিল্লোল পুরকায়স্থ, সাংবাদিক নেতা জাকারিয়া হোসেন জুশেফ, জীবনান্দ সূত্রধর ও রুকনুজ্জামান জোহরী, মানবজমিনের শাল্লা প্রতিনিধি পিসি দাস ও আজকের পত্রিকার প্রতিনিধি বিপ্লব রায়, যায়যায়দিনের প্রতিনিধি দিলুয়ার হোসেন, সিলেটের ডাকের প্রতিনিধি হাবিবুর রহমান, আমার সংবাদের প্রতিনিধি পাবেল আহমদ, আরসি দাস, শিব্বির আহমদ তালুকদার ও দৈনিক সকালের সময়ের তাহিরপুর প্রতিনিধি সাবজল হোসাইন। 


উল্লেখ্য, দিরাইয়ের কচুয়া নামক স্থানে কালনী নদীর পাশে একটি প্রভাবশালী মহল নিয়মনীতি না মেনে অবৈধভাবে ওই গ্রামের হিন্দু পরিবারের রেকর্ডকৃত জলমহাল জোরপূর্বক ভোগ করে আসছিল। এ ব্যাপারে দিরাই থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়। পরে স্থানীয় মেয়রসহ বিশিষ্টজনদের মধ্যস্থতায় বিষয়টি সুরাহার ব্যবস্থা করা হয়। পরে দিরাইয়ের সাবেক মেয়র ট্রিপল মার্ডার মামলার আসামি মোশাররফ মিয়ার অপচেষ্টায় তা ভেস্তে যায়। 


পরে বিষয়টি নিয়ে দিরাই প্রেস ক্লাবকে অবহিত করলে দিরাইয়ের সংবাদকর্মীরা এসব প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে সংবাদ করার প্রস্তুতি নেন। এমন খবরে তড়িঘড়ি করে জলমহাল ভোগকারী মোশাররফ মিয়ার ভাতিজা রায়হান গংরা সংবাদ না করার জন্য সাংবাদিকদের নানাভাবে ম্যানেজ করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। পরবর্তীতে গত বৃস্পতিবার রাতে তড়িঘড়ি করে সাংবাদিকদের কণ্ঠ রোধ করতে সাজানো মামলা দিয়ে সাংবাদিক লিটনকে গ্রেফতার করানো হয়।


অভিযোগের ব্যাপারে জানতে দিরাই পৌরসভার সাবেক মেয়র মোশাররফ মিয়ার মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগ করেও তার দুটি নাম্বার বন্ধ পাওয়া যায়। এ ব্যাপারে  (মোশাররফ মিয়া)'র ভাতিজা রায়হান বলেন, আমাদের জলমহালের লোকদের জিম্মি করে জিয়াউর রহমান লিটন ও তার সঙ্গীয় লোকজন মাছ ধরতে থাকলে আমি দিরাই থানা পুলিশের সহযোগিতা চাই। পরে দিরাই থানার ফোর্স গিয়ে জিম্মি অবস্থায় আমার লোকজনকে উদ্ধার করে। এ ঘটনায় পরবর্তীতে আমি নিজে বাদী হয়ে মামলা করলে পুলিশ জিয়াউর রহমান লিটনকে গ্রেফতার করে।  


দিরাই থানার ওসি (তদন্ত) আকরাম আলী বলেন, মামলার ভিত্তিতে তাকে গ্রেফতার করে শুক্রবার আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

Commentbox

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post

Recents