শনিবার, ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

সমাজসেবার কর্মচারী সুব্রত রয়েছেন বহাল তরিয়তে: উৎকোচের অভিযোগের শেষ নাই

মো, আলী হোসেন খান:

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর সমাজেসবা কার্যালয় তৃতীয় শ্রেনীর এক কর্মচারী দীর্ঘ ২৯ বছর ধরে চাকরি করছেন জগন্নাথপুরে । ওই কর্মচারী জগন্নাথপুর সমাজ সেবা কার্যালয়ের সমাজকর্মী সুব্রত তালুকদার। সরকারী নিয়ম উপেক্ষা করে প্রবাসী অধ্যুষিত জগন্নাথপুরে বিধিবহির্ভূত ভাবে এ উপজেলায় টিকে থাকায় স্থানীয় ভুক্তভোগী জনসাধারণের মধ্যে দেখা দিয়েছে অসন্তোষ।

স্থানীয় ভুক্তভোগী জনসাধারণ জানান, প্রবাসী অধ্যুষিত জগন্নাথপুর উপজেলায় সমাজকর্মী সুব্রত তালুকদার বছরের পর বছর জগন্নাথপুরে আটকে আছেন। বিধবা, বয়স্ক ভাতাসহ বিভিন্ন সুবিধা পেতে জগন্নাথপুর সমাজসেবা কার্যালয়ে দরিদ্র ও অসহায়রা গেলে তাদের কাছে উৎকোচ দাবি করেন । তার কথামতো উৎকোচ না দিলে কোনো কাজ হয় না। এমনকি উৎকোচ দেওয়ার পরও কারো কারো কাজ আটকে রয়।

জগন্নাথপুরে পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ড বাসিন্দা একশ পনের বছর বয়সী বৃদ্ধা জয়তারা বিবি তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, বয়স্ক ভাতার আবেদন করার পর সুব্রত তালুকদার কার্ড দিতে গড়িমসি করেন। পরে তার দাবি অনুযায়ী পাঁচশ টাকা দিলে এখন পর্যন্ত তার ভাতার কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জগন্নাথপুর ৬ নং ওয়ার্ডের এক পুরুষ বাসিন্দা বলেন, তিনির মা মৃত্যুবরণ করায় মরনোত্তর ভাতা পেতে জগন্নাথপুর সমাজসেবা কার্যালয়ে যান। অফিসের তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী সুব্রত তালুকদার তার কাছ থেকে খরচ বাবদ অগ্রীম এক হাজার টাকা নেন। এরপর কয়েকমাস অতিবাহিত হলে তিনি এখন পর্যন্ত ভাতার কার্ড পাননি।

জগন্নাথপুর গ্রামের বাসিন্দা কুটি দাস বলেন, ব্যবসায়ীক লোন দেওয়ার কথা বলে জগন্নাথপুর সমাজসেবা কার্যালয়ে কর্মরত সুব্রত তালুকদার তার কাছে পাঁচ হাজার টাকা দাবি করেন। তিনি দুই হাজার টাকা দিলে একবছর অতিবাহিত হয়; কিন্তু এখন পর্যন্ত তিনি লোন পাননি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জগন্নাথপুর সমাজসেবা কার্যালয়ের সুব্রত তালুকদার ইউনিয়ন সমাজকর্মী হিসেবে কর্মরত আছে। তিনি ১৯৯৪ সালে জগন্নাথপুর সমাজসেবা কার্যালয়ে যোগদান করে জগন্নাথপুর পৌরসভাসহ আরও চারটি ইউনিয়নে দায়িত্ব পালন করছেন। ইতোমধ্যে কয়েকজন সমাজসেবা কর্মকর্তা বদলি হলেও অদৃশ্য কারণে ইউনিয়ন সমাজকর্মী সুব্রত তালুকদার জগন্নাথপুর সমাজসেবা কার্যালয়ে বহাল তরিয়তে।

এই বিষয়ে সুব্রত তালুকদার বলেন টাকা পয়সা লেনদেনের বিষয়টি মিথ্যা, আমি কোনো কাজে টাকা খাইনা।

জগন্নাথপুর সমাজসেবা কার্যালয় কর্মকর্তা বিলাল হোসেন বলেন, সমাজসেবা কার্যালয়ে বয়স্ক, বিধবা ভাতাসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা পেতে কোনো টাকা নেওয়া হয়না। অফিসের কোনো কর্মচারী কর্তৃক টাকা লেনদেন বিষয়ের অভিযোগ পেলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সুনামগঞ্জ জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ পরিচালক সুচিত্রা রায় বলেন, জগন্নাথপুর সমাজসেবা কার্যালয়ের কোনো কর্মচারীর বিরুদ্ধে উৎকোচের অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ